মিত্রদের ৪০ আসনে ছাড় দিতে পারে বিএনপি, চলছে দরকষাকষি

সময়ের প্রবাহ:

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। দলটি এখন পর্যন্ত ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে, বাকি ৬৩ আসনের প্রার্থী চূড়ান্তের কাজ চলছে। এসবের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০টি আসন মিত্র দলগুলোর জন্য ছাড় দিতে পারে বিএনপি। এ নিয়ে চলছে চূড়ান্ত দরকষাকষি।

জোট ও আসন সমঝোতা

বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের সহযোগী দলগুলোকেই নির্বাচনী সঙ্গী হিসেবে রাখতে চায়। তরুণদের নিয়ে গড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-কেও গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, “যেসব আসনে সহযোগী দলগুলোর আগ্রহ আছে, সেখানে বিএনপি প্রার্থী দেয়নি।”

আলোচনায় নতুন ও পুরনো মিত্ররা

সূত্র বলছে, এনসিপির সঙ্গে বিএনপির আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে আসন সংখ্যা এখনো নির্ধারিত হয়নি। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “আদর্শিক সংহতি থাকলে জোট বিবেচনা করা হবে, আপাতত আমরা এককভাবেই এগোচ্ছি।”

এদিকে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ ইতিমধ্যে ঢাকা-১৩ আসনে প্রচারণা শুরু করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থও গুলশান-বনানী এলাকায় মাঠে নেমেছেন।

ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ আসন

বিএনপির নীতিনির্ধারকদের মতে, ঢাকার ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী), ঢাকা-১০ (ধানমন্ডি) ও ঢাকা-১৮ (উত্তরা) আসন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একাধিক আসন ছাড় না দেওয়ার পক্ষে তৃণমূল নেতারা জোর দিচ্ছেন।

যেসব আসন মিত্রদের জন্য খালি

বিএনপি মিত্র দলের ১৪ শীর্ষ নেতার আসনে প্রার্থী দেয়নি, ধারণা করা হচ্ছে এসব আসন তাদের জন্যই ছাড় দেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছেন—

পিরোজপুর-১: মোস্তফা জামাল হায়দার (জাতীয় পার্টি-জাফর)

বগুড়া-২: মাহমুদুর রহমান মান্না (নাগরিক ঐক্য)

ঢাকা-১৭: আন্দালিব রহমান পার্থ (বিজেপি)

লক্ষ্মীপুর-১: শাহাদাত হোসেন সেলিম (এলডিপি)

কিশোরগঞ্জ-৫: সৈয়দ এহসানুল হুদা (বাংলাদেশ জাতীয় দল)

লক্ষ্মীপুর-৪: তানিয়া রব (জেএসডি)

ঢাকা-১৩: ববি হাজ্জাজ (এনডিএম)

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬: জোনায়েদ সাকি (গণসংহতি আন্দোলন)

চট্টগ্রাম-১৪: অধ্যাপক ওমর ফারুক (এলডিপি)

কুমিল্লা-৭: ড. রেদোয়ান আহমেদ (এলডিপি)

নড়াইল-২: ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ (এনপিপি)

পটুয়াখালী-৩: নুরুল হক নুর (গণঅধিকার পরিষদ)

ঝিনাইদহ-২: রাশেদ খান (গণঅধিকার পরিষদ)

ঝালকাঠি-১: ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান (লেবার পার্টি)

মিত্রদের অবস্থান

গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি বলেছেন, তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রার্থী হচ্ছেন।
গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান জানান, “জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।”

সবশেষে বিএনপির পক্ষ থেকে ইঙ্গিত—সবকিছু হিসাব-নিকাশ করেই মিত্রদের জন্য আসন ছাড় দেওয়া হবে, এবং বৃহত্তর জোট গঠনের দিকেও দলটি নজর রাখছে।

somoyerprobaho - copyright © All rights reserved. | This Site Developed by Arifin Riad