কর্মক্ষেত্রে সুনাম ছড়াচ্ছেন গৌরনদীর সাবেক দুই কর্মকর্তা

সময়ের প্রবাহ:

জনকল্যাণমুখী কাজ করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তৎকালীণ বরিশালের গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)। এ উপজেলা থেকে বদলী হওয়ার পর অন্য উপজেলায় যোগদান করেও নিজ নিজ কর্মস্থলে জনকল্যানমূখী কাজের ধারা অব্যাহত রেখেছেন।

যে কারনে ওই দুই কর্মকর্তার সুনাম ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পরেছে। দুই কর্মকর্তা হলেন- গৌরনদী উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু আবদুল্লাহ খান ও সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাজিব হোসেন।

জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলায় কর্মকালীণ সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু আবদুল্লাহ খান শিক্ষার্থীদের জন্য উপজেলা মডেল পাঠাগার, ক্লাব এন্ড সোসাইটি চালুকরন, বিদ্যালয়ে ডিবেটিং ক্লাব চালু, ইংরেজি ভাষা শিক্ষা ক্লাব, বিজ্ঞান ক্লাব স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহন করেন। এছাড়াও ছাত্রীদের বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন (হাইজিন কর্নার) করেন। যা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা পায়।

পাশাপাশি শিশুদের বিনোদনের জন্য উপজেলার মধ্যে পার্ক নির্মান, স্কুল-কলেজ মাদ্রাসায় সরকারী বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদান রাখেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে আবু আব্দুল্লাহ খান শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক হিসেবে কর্মরত।

ওই উপজেলায় যোগদানের পর থেকে সরকারী দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জনকল্যানমূখী কর্মকান্ডের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন। এরইমধ্যে ঝড়েপড়া শিক্ষার্থী রোধে “শিক্ষা সারথী” নামের একটি তহবিল গঠনের উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। যা ওই উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু আবদুল্লাহ খান বলেন, নদী বেষ্টিত ভেদরগঞ্জের অনেক পরিবার চরাঞ্চলে বসবাস করেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশ পরিবারের অর্থনৈতিক সক্ষমতা সীমিত হওয়ায় তাদের সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ প্রায়ই সীমিত থাকে। অর্থাভাবে যাতে কোন মেধাবী শিক্ষার্থীর স্বপ্ন বাঁধাগ্রস্ত না হয়, সেই চিন্তা থেকে আমরা “শিক্ষা সারথি” নামের একটি তহবিল গঠন করেছি।

শিক্ষা সারথি’র মূল লক্ষ্য হচ্ছে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি ও সহায়তার মাধ্যমে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, তহবিলটি পরিচালিত হবে স্থানীয় সমাজকল্যাণ খাত, প্রবাসী ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি এবং সাধারণ মানুষের স্বেচ্ছা অনুদানের মাধ্যমে। সংগৃহীত অর্থের একটি অংশ তফসিলি ব্যাংকে মেয়াদি আমানত হিসেবে রাখা হবে, যার লভ্যাংশ থেকে চলমান সহায়তা কার্যক্রম চালানো হবে।

এছাড়া একটি পৃথক চলতি হিসাব থাকবে, যেখান থেকে তাৎক্ষণিক প্রয়োজন অনুযায়ী সরাসরি সহায়তা প্রদান করা হবে। এতে তহবিলটি দীর্ঘমেয়াদে টেকসই, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক ভাবে পরিচালিত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

অপরদিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাজিব হোসেন গৌরনদীতে কর্মকালীণ সময়ে “এক দিনে আবেদন, একদিনেই নামজারি” সম্পন্ন করে দেশব্যাপী আলোচিত হন। পাশাপাশি স্বচ্ছ ভূমি সেবা, ভূমি অফিসের দালাল নির্মূল, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, খাল খননের মত উদ্যোগ গ্রহন করে অল্প সময়ের ব্যবধানে স্থানীয়দের মন জয় করে নেন। বর্তমানে তিনি টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত অব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ভূয়াপুর পৌরসভায় মো. রাজিব হোসেন প্রশাসক হিসেবে যোগদানের পর পাল্টে গেছে ভূয়াপুরের চিত্র। ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, হয়রানিমুক্ত ভাবে ভূমি সেবা, মাদক নির্মূলে অভিযান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ফুটপাত দখলমুক্তসহ জনকল্যানমূলক বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে তিনি ওই উপজেলায় ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছেন।

নানা সমস্যায় জর্জরিত ভূয়াপুর এখন আশপাশের পৌরসভাগুলোর মধ্যে মডেল হয়ে উঠছে। এবিষয়ে তিনি বলেন, ভূয়াপুর পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব নেওয়ার পরই দেখেছি পুরো শহর জুড়ে বিশৃংখলা। ফুটপাতগুলো অবৈধভাবে দখল করে ছিলো। বাসষ্ট্যান্ড, অটোষ্ট্যান্ড, সিএনজি ষ্ট্যান্ডে যত্রতত্র গার্ড়ি পাকিং।

সবমিলিয়ে পৌরবাসী অতিষ্ট হয়ে উঠছিলো। তাই পৌরবাসীকে স্বস্তি দেওয়ার লক্ষে পরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে বাসষ্ট্যান্ড বড় করে দেওয়া হয়েছে। সিএনজি ষ্ট্যান্ড সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সড়কের চাঁদাবাজি বন্ধের পাশাপাশি ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়েছে। শহরকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সমস্ত ব্যানার-ফেস্টুন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সর্বোপরি একটি আধুনিক ভূয়াপুর গড়তে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

somoyerprobaho - copyright © All rights reserved. | This Site Developed by Arifin Riad